প্রকাশিত: ২৬/০৪/২০১৭ ৮:০৬ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
দেশের প্রথম ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে কক্সবাজারের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মহেশখালীকে। কাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
ডিজিটাল দ্বীপ প্রকল্পে উচ্চগতির ইন্টারনেট এবং তথ্যপ্রযুক্তি-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমাধানের ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়। প্রায় ৩৬২ দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মহেশখালী দ্বীপের ৩ লাখ বাসিন্দার জীবনমানের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকার।
জানতে চাইলে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ থেকে ইতিমধ্যে মহেশখালী উপজেলাকে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ ঘোষণা করা হয়েছে। কোরিয়ান টেলিকম (কেটি) প্রতিষ্ঠানের কারিগরি সহায়তায় প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
প্রায় ২২ কোটি ৩৫ লাখ ৮১ হাজার টাকার এ প্রকল্পের কাজ ২০১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দ্বীপের দরিদ্র লোকজনের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। আর্থসামাজিক বৈষম্য কমে যাবে। জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের মাধ্যমে দ্বীপের জনগণের অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন কমে যাবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন।
গত সোমবার সকালে মহেশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে উচ্চক্ষমতার ইন্টারনেট সংযোগ টানা হয়েছে। এই বিদ্যালয়সহ প্রাথমিকভাবে মহেশখালী পৌরসভা এবং উপজেলার ছোটমহেশখালী ও বড়মহেশখালী ইউনিয়নের ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
আইওএমের প্রকল্প কর্মকর্তা রেজাউল আল মাসুম বলেন, প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি উপজেলার একটি পৌরসভা ও দুটি ইউনিয়নে প্রায় ১৯ কিলোমিটারের অপটিকাল ফাইবার লাইন টানা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাদ্রাসা, চারটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক, চারটি সরকারি দপ্তরসহ ওই ২৫টি ভবনে সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
আইওএম বলছে, ভৌগোলিক অবস্থান, অবকাঠামো ও মানবসম্পদের অভাব এবং অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন বিবেচনায় নিয়ে মহেশখালীকে ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্র বলছে, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোরিয়া টেলিকম, আইওএম ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। কোরিয়া টেলিকম ইতিমধ্যে কোরিয়ায় ‘গিগা আইল্যান্ড’ নামে আরেকটি অনুরূপ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে মহেশখালীর মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ উচ্চগতির ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তি সুবিধা পাবে। তাদের শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, তথ্য ও জ্ঞানে প্রবেশাধিকার বাড়বে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ‘শিক্ষামূলক কর্মসূচি’ চালু ও শিক্ষার্থীদের এমআইএস ডেটাবেইস তৈরি, কৃষকদের জন্য ই-বাণিজ্য সুবিধা, তথ্যপ্রযুক্তিতে শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষ করতে প্রশিক্ষণ ইত্যাদি কার্যক্রম চালু করা হবে।
মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকসুদ মিয়া বলেন, ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড-মহেশখালী’ প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন।
বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের তাণ্ডব, পাহাড়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের তৎপরতা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এসব বিষয়ে তথ্য পেতে এই প্রকল্প কাজে লাগবে বলে মনে করছে পুলিশ। মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, একসময় মহেশখালী উপকূল দিয়ে হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে। ‘ডিজিটাল আইল্যান্ড’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এমন অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন রোধ হবে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারের সাবেক বিআরটিএ’র মোটরযান পরিদর্শকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সাবেক সহকারি মোটরযান পরিদর্শক (বর্তমানে বান্দরবানে কর্মরত) ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওগুলোর গতিবিধিতে নজরদারি বাড়ছে

মিয়ানমারের ভেতরে সংঘাত-সহিংসতা বাড়ছে। এদিকে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। এ কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিষয়ে ...